পরীক্ষাঃ ৯ই ডিসেম্বর, ২০০৬

 

দেওয়ানী কার্যবিধি, ১৯০৮

প্রশ্ন-১। নিম্নলিখিত যে কোন চারটি দৃষ্টান্ত সহ ব্যাখ্যা করুনঃ ক) মোকদ্দমা উৎপত্তির কারণ; খ) আইনানুগ প্রতিনিধি; গ) বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞা; ঘ) রেসজুডিকাটা বা দোবারা; ঙ) রায়ের পূর্বে অগ্রীম ক্রোক; চ) প্লীডিংস এর সংশোধন; ছ) বিকল্প সমন জারী; জ) আদালতের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা।

প্রশ্ন-২। ক) আদালতের এখতিয়ার এবং দেওয়ানী প্রকৃতির মামলা বলিতে কি বোঝেন? নির্দিষ্ট আইনের বিধান উল্লেখপূর্বক ব্যাখ্যা করুন।

খ) কি কি কারণে মামলার আরজি খারিজ করা যায়? আরজি খারিজের আইনগত তাৎপর্য কি? আরজি খারিজের আদেশের বিরুদ্ধে বাদীর কোন প্রতিকার আছে কি?

প্রশ্ন-৩। ক) কোন আইনের বিধান বলে আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আদেশ প্রদান করেন? অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রদানের পূর্বে আদালত কি কি বিষয় বিবেচনা করে থাকেন?

খ) জামাল কর্তৃক দায়েরকৃত মামলায় আদালত বিবাদী রহিমের বিরুদ্ধে বিরোধীয় সীমানা প্রাচীর না ভাঙার জন্য অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ জারী করেন। এই নিষেধাজ্ঞার আদেশ অগ্রাহ্য করে বিবাদী রহিম বিরোধীয় সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলে। জামান রহিমের বিরুদ্ধে কি প্রতিকার পেতে পারে এবং কোন আইনে?

সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন, ১৮৭৭

প্রশ্ন-৪। ক) দলিল বাতিল বলতে কি বুঝেন? কে দলিল বাতিলের প্রার্থনা করতে পারেন এবং কি কি কারণে?

খ) বাদী বিরোধীয় দলিলে একজন পক্ষ। তিনি কি শুধুমাত্র দলিলটি জাল এবং প্রতারণামূলক এবং উহা তার উপর বাধ্যকর নয় মর্মে ঘোষণামূলক ডিক্রীর জন্য মামলা করতে পারে? যদি না পারেন, তাহলে কোন আইনের কোন ধারা বলে তিনি প্রতিকার প্রার্থনা করতে পারেন?

প্রশ্ন-৫। জাফর ২০০৩ সালের ৩০ জুন তারিখে সাদেকের সাথে, ১,৫০,০০০ টাকা মূল্য নির্ধারণে ৫০ শতাংশ ভূমি বিক্রয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। ঐ বৈঠকেই জাফর অগ্রীম পণমূল্য বাবদ সাদেকের নিকট থেকে সাক্ষীগণের মোকাবেলায় নগদ ৫০,০০০ টাকা গ্রহণ করে সাদেকের বরাবর একখানি বায়নাপত্র সম্পাদন করে দেয়। পক্ষদ্বয়ের মধ্যে কথা হয় যে, ৩ বৎসরের মধ্যে পণমূল্যের অবশিষ্ট টাকা প্রদান করলে জাফর সাদেকের বরাবর একখানি সাফ কবলা দলিল সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রি করে দেবে। সাদেক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জাফরকে পণমূল্যের টাকা গ্রহণে প্রতিশ্র“তি সাফ কবলা দলিল সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রি করে দেবার জন্য বার বার অনুরোধ করে কিন্তু জাফর নানা অজুহাতে কালক্ষেপণ করে পরিশেষে প্রতিশ্র“ত কবলা দলিল সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রি করে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। সুনির্দিষ্ট কার্যকর প্রার্থনা সন্নিবেশ করে যথাযথ আদালতে দায়েরের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ আরজি মুসাবিদা করুন। জাফর কি বলতে পারে যে, সাদেক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাকী টাকা প্রদান করে নাই এবং তাই সে দলিল সম্পাদন করে দিতে বাধ্য নয়?

প্রশ্ন-৬। রফিক পৈতৃক ওয়ারিশ সূত্রে ৩৫ শতাংশের এক খণ্ড জমির মালিক। বিগত ভূমি জরিপকালে ভুলবশতঃ ঐ জমিটি আগন্তক জলিলের নামে রেকর্ড হয়ে যায়। এই ভুল রেকর্ডের সুযোগ নিয়ে জলিল ২০০৬ সালের ২ জানুয়ারী তারিখে বলপূর্বক রফিকের জমিটি দখল করে নিয়ে তথায় একটি বসত বাড়ি তৈরী করে এবং পরিবার পরিজন নিয়ে সেখানে বসবাস করছে।
আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা উল্লেখে যথাযথ প্রতিকার প্রার্থনা করে রফিকের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ আরজি প্রস্তুত করুন।

ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮

প্রশ্ন-৭। ক) কি কি পদ্ধতিতে একটি ফৌজদারী মামলা দায়ের করা যায়? ঐ সব পদ্ধতির প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য আলোচনা করুন।

খ) নারাজি বলতে আপনি কি বুঝেন? একটি নারাজির দরখাস্ত নিষ্পত্তি করতে ক্ষমতাবান একজন ম্যাজিস্ট্রেট যে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন, আলোচনা করুন। ম্যাজিস্ট্রেট প্রদত্ত ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কোন প্রতিকার আছে কি?

প্রশ্ন-৮। ক) ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৪৫ ধারার বিধান মতে প্রসিডিং রুজু করবার জন্য আইনের উপাদানগুলি কি কি?

খ) মৌখিক এবং দালিলিক সাক্ষ্য প্রমাণ পর্যালোচনা করে ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব যদি দেখতে পান যে বিবাদমান পক্ষগণের মধ্যে বিরোধীয় জমিতে কোন পক্ষের দখল বিদ্যমান আছে তা সাব্যস্ত করতে তিনি অসমর্থ, তাহলে তিনি কি আদেশ প্রদান করবে? যদি সাক্ষ্য প্রমাণ বিবেচনা করে ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব দেখতে পান যে, প্রসিডিং রুজু করার ৬০ দিনের মধ্যে বিরোধীয় ভূমিতে প্রথম পক্ষের কোন দখল ছিল না, তাহলে প্রসিডিং এর পরিণতি কি হবে?

প্রশ্ন-৯। ক) কোন আইনের কোন বিধান বলে হাই কোর্ট বিভাগ উহার অধীনস্ত যে কোন আদালত থেকে বিচারাধীন কোন ফৌজদারী মামলা তুলে এনে স্বয়ং বিচার করতে পারেন অথবা বিচারের জন্য অধঃস্তন অন্য কোন আদালতে প্রেরণ করতে পারেন? বিস্তারিত আলোচনা করুন।

খ) কোন আইনের কোন বিধান বলে একজন দায়রা জজ তার অধীনস্ত যে কোন আদালত থেকে বিচারাধীন কোন ফৌজদারী মামলা তুলে এনে স্বয়ং বিচার করতে পারেন অথবা বিচারের জন্য অধীনস্ত যে কোন আদালতে প্ররণ করতে পারেন? বিশদভাবে আলোচনা করুন।

দন্ডবিধি, ১৮৬০

প্রশ্ন-১০। দণ্ডবিধি আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা উল্লেখ উদাহরণ সহ যে কোন চারটি ব্যাখ্যা করুনঃ ক) প্রতারণা ও অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ করা; খ) আত্মরক্ষার অধিকার; গ) সাধারণ অভিপ্রায় এবং সাধারণ ইচ্ছা; ঘ) হত্যার উদ্দেশ্যে নিন্দনীয় নরহত্যা ও হত্যার উদ্দেশ্যবিহীন নিন্দনীয় নরহত্যা; ঙ) অপহরণ এবং ঘৃণ্য উদ্দেশ্যে কোন মহিলা অপহরণ; চ) যে-আইনী জনতাবদ্ধ হওয়া এবং দাঙ্গা হাঙ্গামা করা; ছ) জালিয়াতি এবং জাল জানা সত্ত্বেও কোন দলিল আসল বলে ব্যবহার করা।

প্রশ্ন-১১। A, B, C, D, E এবং F বে-আইনী জনতাবন্ধে X এর একখণ্ড জমি বলপূর্ব দখল করার এক সাধারণ অভিপ্রায়ে লাঠি, ফালা, ডেগার, প্রভৃতি মারাত্মক অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঐ সাধারণ অভিপ্রায় কার্যকর করার জন্য X এর জমিতে যায়। X এবং তার লোকজন আগ্রাসীদের বাধা দেয়, ফলে উভয় পক্ষে মতে মারাত্মক ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে A লাঠি দিয়ে X এর মাথায় বাড়ি মেরে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে। ফলে X মাটিতে পড়ে যায়। B ফলা দিয়ে X এর কণিষ্ঠ পুত্র Y এর তলপেটে আঘাত করে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে। C তার হাতে থাকা ফলা দিয়ে Y এর ডান হাতের কবজিতে মারাত্মক জখম করে। হাসপাতালে ৪৫ দিন চিকিৎসার পর Y সৌভাগ্যবশতঃ এইসব মারাত্মক জখম হয়েও বেঁচে যায়। D তার হাতে থাকা লাঠি দিয়ে Z এর মাথায় আঘাত করে সাধারণ জখম করে। সংঘর্ষ চলাকালে A, B এবং F সামান্য ফুলা জখম প্রাপ্ত হয়।

দণ্ডবিধি আইনরে কোন কোন ধারা অনুযায়ী উক্ত ছয় জন আসামীর বিরুদ্ধে আপনি তাদের ব্যক্তিগত অপরাধের জন্য অভিযোগ গঠন করবেন?

প্রশ্ন-১২। ক) অপরাধ সংঘটনে সহায়তা বলতে আপনি কি বুঝেন? কোন আইনের কোন ধারায় অপরাধ সংঘটনের সহায়তার জন্য শাস্তির বিধান আছে? অপরাধ সংঘটনে সহায়তার জন্য আইনে কি পরিমাণ শান্তির বিধান আছে?

খ) A, B এবং C Z কে বিষ প্রয়োগে হত্যা করার জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। ঐ ষড়যন্ত্র অনুযায়ী A বিষ সংগ্রহের জন্য B কে প্রয়োজনীয় অর্থ দেয়। B বিষ সংগ্রহ করে C কে দেয়। A এবং B এর অনুপস্থিতিতে C ঐ বিষ Z কে খাইয়ে তার মৃত্যু ঘটায়।

ঘটনার প্রেক্ষিতে Z এর মৃত্যুর জন্য উক্ত তিন জন আসামীর দায় দায়িত্ব বিশ্লেষণ করুন।

তামাদি আইন, ১৯০৮

প্রশ্ন-১৩। ক) তামাদি মার্জনা বলতে কি বুঝেন? কোন আইনের কোন ধারা বলে তামাদি মার্জনার দরখাস্ত করা যায়?

খ) কোন কোন মার্জনার প্রকার মোকদ্দমার তামাদি মার্জনার জন্য দরখাস্ত দাখিল করা যায়?

গ) বিশেষ আইনের আওতাভুক্ত মামলার ক্ষেত্রে, সেখানে তামাদির জন্য বিশেষ বিধান রয়েছে, সেখানে কি তামাদি মার্জনার জন্য প্রার্থনা করতে পারেন?

ঘ) তামাদির মার্জনা সুবিধা পাওয়ার জন্য একজন প্রার্থিকে যে সব শর্ত পূরণ করতে হবে তা ব্যাখ্যা করুন।

ঙ) মোকদ্দমা পরিচালনায় প্রার্থীর গুরুতর ত্র“টি ও অবহেলা প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও কি আদালত মানবিক কারণ উল্লেখে তামাদি মার্জনা করতে পারেন?

সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২

প্রশ্ন-১৪। ক) সাক্ষ্য আইনের সংশ্লিষ্ট ধারার আলোকে estoppel এবং waiver দৃষ্টান্ত সহকারে বিশ্লেষণ করুন।

খ) আকরাম সাহেব অবিভক্ত পৈত্রিক বসত বাড়ীর একজন অন্যতম মালিক। ঐ বাড়ীতে তার অংশটুকু তিনি তার ভাই বোনের ব্যবহার করতে দিয়ে ১৬ বৎসর যাবৎ বিদেশে অবস্থান করেছেন। বাড়ী ফিরে তিনি তার অংশ দাবী করতে কি বারিত হবেন? আপনার উত্তরের পক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করুন।

প্রশ্ন-১৫। সংজ্ঞা লিখুন এবং পার্থক্য নিরূপন করুনঃ

ক) স্বীকার, অপরাধ স্বীকার এবং মৃত্যুকালীন জবানবন্দী;

খ) কোন অবস্থার প্রেক্ষিতে একজন আসামীকে শুধুমাত্র তার স্বীকারোক্তির উপর নির্ভর করে শাস্তি দেয়া যায়? শুধুমাত্র একজন সহ-আসামীর স্বীকারোক্তির উপর নির্ভর করে অপর আসামীকে শান্তি দেয়া চলে কি?

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ, ১৯৭২

প্রশ্ন-১৬। পেশাগত আচরণবিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহ-আইনজীবীদের প্রতি এবং জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করুন।

প্রশ্ন-১৭। বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের গঠন এবং কার্যাবলীসহ এনরোলমেন্ট কমিটির গঠন ও কার্যাবলী আলোচনা করুন।

প্রশ্ন-১৮। ঢাকা মহানগরের জন্য এডভোকেট ইফতিখার সাহেব অগ্রণী ব্যাংকের পক্ষে আইন পরামর্শক হিসেবে মামলা মোকদ্দমা পরিচালনা করে আসছেন। এমনিভাবে ব্যাংকের একজন ঋণ খেলাপী গ্রাহকের নিকট থেকে ৫,০০,০০০ টাকা আদায়ের জন্য একটি টাকা মামলা দায়েরের লক্ষ্যে ব্যাংক আলম সাহেবকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কোর্ট ফি প্রদান করে। আলম সাহেব যথাসময়ে আদালতে মামলা দায়ের করার জন্য আরজির মুসাবিদা প্রস্তুত করে ব্যাংককে তা অবহিত করেন এবং ব্যাংকের নিকট তার ফি বাবদ প্রাপ্র ১০,০০০ টাকার একটি বিল প্রেরণ করেন। পুনঃ পুনঃ তাগাদা সত্বেও ৪ মাস সময়ের মধ্যে ব্যাংক আলম সাহেবের বিল পরিশোধে ব্যর্থ হয়। তৎপর আলম সাহেব ব্যাংককে আইনী নোটিশের মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে, নোটিশ প্রাপ্তির এক মাসের মধ্যে ব্যাংক যদি তার প্রাপ্য বিলের টাকা পরিশোধ না করে, তা হলে তিনি কোর্ট ফি বাবদ তাকে দেয়া টাকা থেকে তার বিলের টাকা কেটে নিতে বাধ্য হবেন। ব্যাংক দাবী পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় আলম সাহেব তার প্রাপ্য ফিসের টাকা কোর্ট ফি বাবদ দেয়া টাকা থেকে কেটে নেন।

উপরোক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে এডভোকেট ইফতিখার আলম সাহেব পেশাগত নীতিমালা ও আচরণবিধি লঙ্ঘণ ও অসাদাচরন করেছেন কি না যুক্তিসহ বিশ্লেষণ করুন।